বাংলাদেশে আবারও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে! বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নতুন প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, পেট্রল, অকটেন, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে বাড়ানো হয়েছে ১ টাকা করে । জানুয়ারিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১ টাকা কমানো হয়েছিল, তবে পেট্রল ও অকটেনের দাম অপরিবর্তিত ছিল। ২০২৩ সালের মার্চ থেকে সরকার বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতি মাসে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়।
আজকের তেলের দাম কত?
সরকারী ঘোষণা অনুযায়ী, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ হতে জ্বালানি তেলের দাম হবেঃ
- ডিজেল ও কেরোসিন এর দাম: ১০৫ টাকা
- পেট্রল এর দাম: ১২২ টাকা
- অকটেন এর দাম: ১২৬ টাকা
উল্লেখ্য, গত জানুয়ারি ২০২৫ মাসে দাম উপরোক্ত পরিমানের চেয়ে ১ টাকা কম ছিল।
পেট্রল–অকটেনের দাম বেশি কেন?
সরকারের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, দেশে ব্যবহৃত অকটেন ও পেট্রল সাধারণত ব্যক্তিগত যানবাহনে বেশি ব্যবহৃত হয়। তাই এগুলোকে বিলাসদ্রব্য (লাক্সারি আইটেম) হিসেবে ধরা হয় এবং ডিজেলের তুলনায় সবসময় বেশি দাম রাখা হয়। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) পেট্রল ও অকটেন বিক্রি করে মুনাফা করে। তবে তাদের আসল লাভ-লোকসান নির্ভর করে ডিজেলের দামের ওপর, কারণ দেশে ব্যবহৃত মোট জ্বালানি তেলের ৭৫% ডিজেল। আরো জানুনঃ সিগারেটের দাম ২০২৫ সালে কত বাড়লো?
ডিজেলের দাম বৃদ্ধি কাদের বেশি ক্ষতি করবে?
দেশের মোট জ্বালানি ব্যবহারের বড় অংশ ডিজেল, যা সাধারণত গণপরিবহন, কৃষি ও শিল্পখাতে বেশি ব্যবহৃত হয়। ডিজেলের দাম বাড়লে:
- গণপরিবহনের ভাড়া বাড়তে পারে, ফলে শ্রমজীবী ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির ব্যয় বেড়ে যাবে।
- কৃষি উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে, কারণ সেচযন্ত্র ও কৃষির অন্যান্য কার্যক্রমে ডিজেল ব্যবহার হয়।
- পণ্য পরিবহন ব্যয় বাড়ার কারণে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও বেড়ে যেতে পারে।
- মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে।
জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারন করা হয় কিভাবে?
বাংলাদেশে সরকার ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে স্বয়ংক্রিয় মূল্যের ভিত্তিতে দাম নির্ধারণের নিয়ম ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এর ফলে প্রতি মাসে বিশ্ববাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে। তবে সাধারণ মানুষের প্রশ্ন থেকে যায়—এই স্বয়ংক্রিয় নিয়ম আসলেই জনগণের স্বার্থ রক্ষা করছে কি না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে, তবে বাংলাদেশেও দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পূর্বের অভিজ্ঞতা বলে, বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলেও দেশে তত দ্রুত কমানো হয় না।
এই দাম বৃদ্ধির ফলে আপনার জীবনযাত্রায় কোনো প্রভাব পড়ছে? কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না!